শুক্রবার, ১ মে, ২০২০

বল মিলের ইতিহাস, বিবর্তন


প্রথমদিকে ক্লিংকার গুড়ো করে সিমেন্ট বানানোর জন্যে যে প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হতো তা অনেকটা আমাদের পুরানো সময়ের যাতা বা ঘানীর মতো । দুটো বড় পাথরকে ঘুড়িয়ে তার নিচে ক্লিংকার গুড়ো করা হতো। যেহেতু তখনকার ক্লিংকার তুলনামূলকভাবে অনেক নরম ছিল তাই সেই সময়ের প্রেক্ষিতে এই ঘানি পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় ছিল।  ১৮৪০ এর দশকের শেষের দিকে পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট  একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, তা হচ্ছে ক্লিঙ্কারের হার্ডনেস বা কঠোরতার । পুরানো পদ্ধতিতে এই ক্লিংকার তেমন গুড়ো হতোনা , যারফলে মোটা সিমেন্টের  তৈরি হচ্ছিল (শতকরা ২০ ভাগ সিমেন্টই ১০০ মাইক্রনের বেশি থাকতো )  এর ফলে সিমেন্ট জমাট বাধার গতি খুবই ধীর ছিল এবং চুনের বড় দানার কারণে জমাট বাধার পরে সিমেন্ট প্রসারিত হয়ে ফেটে যাওয়ার লক্ষন দেখা যায়। যদিও ১৮৪০এর পরে থেকে বল মিল ব্যাবাহার শুরু হয়, কিন্তু মোটাদানাকে শুক্ষ করার এই সমস্যাটা দীর্ঘদিন ছিল।ধীরে ধীরে উন্নত মানের লোহা ও ইস্পাতের আবিষ্কার ও ব্যাবহার এবাং উন্নত ইস্পাত ব্যাবহার করে উন্নত মানের মিল ও বল তৈরির ফলে সিমেন্টের সুক্ষতা বৃদ্ধি হতে থাকে বিশেষ কর ১৯  শতকের শেষভাগে গ্রাইন্ডিং প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি ঘটে।  বিংশ শতাব্দেইতে এসে বালা যায় ক্লিংকারের এবাং সিমেন্ট উৎপাদনে নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার হয় । ক্লিংকার ও সিমেন্টের শক্তি ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির প্রযুক্তি ও রসায়ন উদ্ভাবন হতে থাকে । ফলে চাহিদা অনুযায়ী যে কোনো প্রকারের সিমেন্ট তৈরি করা শুরু হায়।

বল মিলস :

টাম্বলিং( tumbling mil) মিল ঃ

যদিও ১৮৪০ সালে প্রথমদিকে বল মিল আবিষ্কার ও ব্যাবহার শুরু হয়েছিল  কিন্তু বলা যায়, মূল অগ্রগতিটি হয়েছিল ১৮৭০ থেকে ১৯০০ এ জার্মানিতে ,সেখানে সিমেন্টের ক্রমবর্ধ্মান চাহিদার কারনে  সিমেন্ট এবং রাসায়নিক শিল্পসংস্থা গুলি সূক্ষ্ম ও চাহিদা সম্পন্য সিমেন্ট তৈরিতে গভেষনা শুরু করে। সর্বপ্রথম একটি যুক্তিসঙ্গত গ্রহণযোগ্য বলমিল বা  টাম্বলিং( tumbling mil) মিলের ডিজাইন করে  ব্রুকনার এবং সাচসেনবার্গ ভাই দ্বয়  এবং ১৮৮৫ সালে গ্রাসনের ওয়ার্কশপে এটি নির্মাণ করাছিল, যা পরবর্তী সময়ে ক্রুপ কোম্পানি এটি অধিগ্রহণ করেছিল।একটি স্টিল ড্রামের মধ্যে কিছু খাজ যুক্ত স্টিল প্লেট লাইনার হিসাব লাগানো হয়েছিল এবং তাতে ৬০ থেকে ১০০মিমি ডায়ার স্টিল বল ব্যাবহার করা হয়েছিল।ফাইন কনাগুলো ছিদ্রযুক্ত গ্রাইন্ডিং প্লেটের ছিদ্র দিয়ে নিচে নেমে আসার ব্যাবস্থাছিল। ফাইন সিমেন্ট আলাদা করার জন্যে নিচে কিছু ছাকুনির ব্যাবস্থা ছিলো যা ভেদ করে সুক্ষ কনা গুলো মিলের নিচের কনভেয়রে পরতো এবং মোটাদানা গুলো একটি  ডিসচার্য স্ক্রিনের মাধ্যমে আলাদা হয়ে বের হতো। ১৯০০ সাল পর্যন্ত এই মিলটিতে ধীরেধীরে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হয় যাতে এরথেকে অধীকতর সুক্ষ সিমেন্ট তৈরি করা যায় এবং এর উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়।

এই একই সময়ে এফ.এল.স্মিথ অ্যান্ড কোং বানিজ্যিকভাবে সিমেন্ট মিল তৈরি করা শুরু করে এবং বেশ সুনাম আর্জন করে। তারা এক ফরাসি উদ্ভাবকের কাছ থেকে একটি টিউব মিলের স্বত্ব কিনে নেয়, এবং এটিতে নতুন করে ডিজাইনের পরে বিশ্বব্যাপী বিক্রি শুরু করেছিল।

টিউব মিল :

আগের মিলটিকেই ( টাম্বলি মিল tumbling mil) অনুভূমিক ভাবে ডিজাইন করে টিউব মিলের ধারনাটি তৈরি হয়েছিল। একটি লম্বা টিউব একটি নির্দিষ্ট অক্ষাংশের বারবার আবর্তিত করা হয় আর ভিতরে বল দেয়ার ফলে বলগুলোও আবর্তিত হতে থাকে। টিউবের ঘুর্ননের গতি কমিয়ে দেয়ার ফলে বলগুলো মিলের ভিতরে অর্ধেক ঘুরেই নিচেপরে যায় এবং এই ঘর্ষন শক্তিকে ব্যাবহার করেই আধুনিক বল মিলের যাত্রা শুরু হয়।

একটি স্টিলের টিউবকে ইস্পাতের  বল দিয়ে কমপক্ষে  অর্ধেক পূর্ণ কারা হয়, নলটি ঘোরার সাথে সাথে বলগুলি ক্রমশ উর্ধমুখী হতে থাকে , তবে মিলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে তারা নলের নীচে পরে যায়, ফলে একটি বলের উপরে আরেকটি বল সজোরে আঘাত করতে থাকে এবং এই দুই বলের মধ্যে কাচামাল অর্থাৎ ক্লিংকার থাকলে ক্লিংকারগুলো ক্রমশ গুড়ো হতে থাকে।প্রথমে এই মিলেও ছিদ্রযুক্ত গ্রাইন্ডিং প্লেটের ব্যাবহার করা হয়েছিল, প্রথমদিকে টিউব গুলো এতো লম্বা হতো না ।

পরবর্তীতে, ক্লিংকার বা কাচামাল  মিলের এক প্রান্তদিয়ে প্রবেশ করানো  হয় এবং ধীরে ধীরে অন্যপ্রান্ত দিয়ে গুড়ো হয়ে পন্যটি বের হয়ে আসতো।তখন মূলত  গ্রাইন্ডিংয়ের  সূক্ষ্মতা ফিডের হার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। ক্লিংকার শক্ত হওয়ার কারনে কিছুকিছু কোম্পানি একাধীক মিলব্যাবহার করতো একটি মিলে কিংকার গুলোকে ক্রাশিং করা হতো ও অপরটিতে  ঐ ক্রাশ পন্যটি ফাইন করা হতো ।পরবর্তিতে মিলকে লম্বা করে এর মধ্যে ছিদ্রযুক্ত পার্টিশন ব্যাবহার করে দুই বা তিন কক্ষ বিশিষ্ট মিল তৈরি করা হয় যার একটি কক্ষ ক্রাশিং ও অপরটি ফাইননেসের কাজ করে ।


বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

Crush Stop. Inspection, হটাৎ বন্ধ করে নমুনা সংগ্রহ।


 ১) প্রথমে চেম্বারের ইনলেট থেকে চেম্বারের শেষ পর্যন্ত মাঝ বরাবর একটি সরল রেখা টানবো।
চেম্বারের ইনলেট থেকে ০.৫ মিটার বাদ দিয়ে ১টি এবং তার দুই পাশ থেকে ২টি অর্থাৎ  মিলের প্রস্থে তিনটি পয়েন্টে করে মোট তিনটি নমুনা নিতে হবে।এখনে খেয়াল রাখতে হবে পাশের নমুনার স্থান লাইনার থেকে ০.৫ মিটার দূরে থাকতে হবে।

২) পরবর্তী নমুনা গুলো প্রথম স্থান থেকে ১ মিটার পরপর থেকে নিতে হবে।

৩) নমুনা ২০ সেমি খনন নিচ থেকে নিতে হবে।অর্থাৎ নমুনা সংগ্রহের স্থানে ২০ সেমি গর্ত করে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে।

৪) নমুনা থেকে চালুনি দিয়ে কাচামাল ছাড়া অন্যান উপাদান (যথা বল, লোহা ইত্যাদি)পৃথক করতে হবে।

৫) নমুনা, ওজন ও ফলাফল গ্রাফ আকারে সংরক্ষন করা ভালো।




1- গড় অভ্যন্তরীণ পরিধি , ব্যাস  পরিমাপ করে রাখতে হবে। 

2-প্রতিটি গ্রাইন্ড চেম্বারের অক্ষ বরাবর তিনটি পৃথক পয়েন্টে উচ্চতা পরিমাপ করতে হবে।

মিল ফিড প্রায় ১০ মিনিট বন্ধ রেখে তারপর মিল বন্ধ করলে অর্থাৎ মিল খালি করে শূন্য স্থানের (Empty hight) মাপ নিলে নিখুত হিসাব রাখা যায়।






রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

নমুনা সংগ্রহ বা সেম্পল কালেকশন পয়েন্ট

একটা সিমেন্ট মিলের উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং উৎপাদিত পণ্যের মান সঠিক আছে কি না ,  তা জানার জন্য বিভিন্ন সময়ে, মিলের বিভিন্ন অংশ থেকে সেম্পল বা নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। বিশেষ করে   উৎপাদন প্রক্রিয়া চলার সময় সার্কিটের বিভিন্ন অংশ থেকে সেম্পল  সংগ্রহ একটি নিয়মিত ও আবশ্যক কাজ। নিচে নমুনা সংগ্রহের জায়গাগুলো নিয়ে সামান্য আলোচনা কর।

         

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২০

সিমেন্ট ব্যাগের ক্ষেত্রফল (ভলিউম)


আমরা জানি যে, খোলা অবস্থায় সিমেন্টের ওজন (ঘনত্ব) = 1440 কেজি / মি৩ (kg/m3) …… .. (1)
আমরা জানি যে, ঘনত্ব = ভর / আয়তন
সুতরাং, আয়তন = ভর / ঘনত্ব …… .. (2)
1 ব্যাগ সিমেন্টের ভর = 50 কেজি …… .. (3)
সমীকরণ অনুযায়ী  (3) কে (1) দ্বারা ভাগ করে,
ভলিউম = 50/1440 কিউবিক মিটার( Cum)
= 0.034722 কিউবিক মিটার( Cum)

ভলিউম কে লিটারে প্রকাশ করলে = 0.034722 x 1000 = 34.722 লিটার( Lit)
অর্থাৎ বলা যায়, 35 লিটার
কিউবিক মিটারকে (Cft) সিএফটিতে রূপান্তর করতে চাইলে 35.3147 দিয়ে গুণ করতে হবে
সুতরাং,
ভলিউম = 0 .0347 x 35.314 = 1.22539 সিএফটি(Cft)
= 1.225Cft
অর্থাৎ বলা যায়,  1.25 সিএফটি(Cft)

প্রতি 50 কেজি সিমেন্টের ব্যাগে 1.25 Cft এর সমতুল্য সিমেন্ট আছে । এ কারণেই স্ট্যান্ডার্ড জিগুয়েজ বক্সের( guage box) আকার (বাংলায় ফারমা বক্স নামেও পরিচিত) 1 ফিট x 1 ফিট x 1.25 ফিট আকারের হয়। অর্থাৎ বাক্সটির মাপ হবে 12" x 12" x15 " । ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে এই বাক্সটি প্রচুর ব্যাবহার হয় ।

যদি একটি সিমেন্ট ব্যাগের আকার 30 ইঞ্চি (2.5ft বা 0.762 মিটার) উচ্চতা, 20 ইঞ্চি (1.67ft বা .508 মিটার) প্রস্থ এবং 4 ইঞ্চি (0.33ft বা 0.104 মিটার) পুরু হয় তাহলে এতে 50 কেজি সিমেন্ট রাখা সম্ভব হবে।





শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২০

গ্রাইন্ডিং বলের ঘনত্ব ও ক্ষেত্রফল



কর্মক্ষেত্রে  একটি গ্রাইন্ডিং বলের পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল এবং ঘনত্ব বা ভলিউম জানা সময় সময় প্রয়োজন হয়ে পরে।   বল মিলে  মিডিয়া পুনরায় লোড করার জন্য, গুছিয়ে রাখার সময় কি ধরনের ও কয়টি ধারক প্রয়োজন বা বলের শ্রেনীবিন্যাস করা ইত্যাদি বিবিধ প্রয়োজনে  দ্রুত এবং সঠিক গণনার প্রয়োজন হয় । যার কারনে আমাদের গ্রাইন্ডিং বলের ভলিওম ও সারফেইস এরিয়া হিসাব করার সহজ ও সঠিক নিয়মটা আমাদের সবার জানা থাকা ভালো।

সারফেইস এরিয়া বা গোলক অঞ্চল  (একটি গ্রাইন্ডিং বলের পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল), S একটি মান যা বলের ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করে।  গণনার সূত্রটি নিম্নোক্ত:-

S=4*π*R2,

এখানে ,
S – সারফেইস এরিয়া বা গোলক অঞ্চল;
π – PI পাই (ধ্রুবক), একটি গাণিতিক ধ্রুবক যা বৃত্তের পরিধিটির ব্যাসের অনুপাতের সমান। ৩.১৪ পাই  এর জন্য সাধারণত ব্যবহৃত মান;
R-  বলের ব্যাসার্ধ।


একটি গ্রাইন্ডিং বলের ভলিউম বা বলের আয়তন সূত্র নিম্নরূপ:

V=4/3*π*R3,

এখানে,
V- বলের আয়তন
π – PI পাই (ধ্রুবক), একটি গাণিতিক ধ্রুবক যা বৃত্তের পরিধিটির ব্যাসের অনুপাতের সমান। ৩.১৪ পাই  এর জন্য সাধারণত ব্যবহৃত মান;
R-  বলের ব্যাসার্ধ।

আশা করছি  সহজ সূত্রটি সবার খুব কাজে লাগবে ।

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২০

রেসিডিউ (Residue) কি?

Residue শব্দের অনুবাদ দাঁড়ায় অবশিষ্টাংশ । আসলে পুরো শব্দটি হলো  Insoluble residue যার অর্থ অদ্রবণীয় অবশিষ্টাংশ, এটি একটি নন-সিমেন্টিং উপাদান যা পোর্টল্যান্ড সিমেন্টে উপস্থিত। নন-সিমেটিক বলতে সাহজভাবে আমরা বলতে পারি এগুলো  এমন কিছু উপাদান যা কোনো ভাবেই সিমেন্টের অংশ না কিন্তু ক্লিংকার তৈরির সময় এগুলো মিশে যায়।
এই অবশিষ্ট উপাদানগুলি সিমেন্টের বৈশিষ্ট্যগুলিকে প্রভাবিত করে, বিশেষ করে  এর শক্তি সঞ্চয়ের বাধা তৈরি করে। পোর্টল্যান্ড সিমেন্টে নন-সিমেন্টিং উপাদানগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে, এএসটিএম(ASTM) একটি মানদন্ড বা  স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারন করে দিয়েছে যাতে অদ্রবণীয় অবশিষ্টাংশগুলি 0.75% এর বেশি হতে পারবে না। কিন্তু ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ডে এর সীমাবদ্ধতা 1.5%।

যেহেতু উভয়ই কণার আকারের একটি পরিমাপ, তাই অবশিষ্টাংশগুলি সাধারণত ব্লেইনের সাথে যুক্ত থাকে। তবে সব সময় না।
আরো বিভিন্ন কারনে সিমেন্টের কণা আকার ও রেসিডউ নির্ভর করে যেমন, মিল ডিজাইন, বল চার্জ , ক্লিঙ্কার কঠোরতা, জিপসাম সামগ্রী এবং ক্লিংকার তৈরিতে ব্যবহৃত খনিজ উপাদানগুলির( চুনাপাথর) পরিমাণ এবং সেগুলো কতটা শক্ত  এই প্রকার বিভিন্ন বিষিয়ের উপর।

সিমেন্টের অবশিষ্টাংশ করার পদ্ধতি:
যা যা লাগবে,
সিমেন্টের 100 গ্রাম (পরীক্ষার নমুনা), ওজন মাপার যন্ত্র ( যা ১গ্রাঃ) নির্ভুলতার সাথে ওজন করতে পারে, স্ট্যান্ডার্ড চালুনি 90=মাইক্রোন , চালনী কাঁপানো মেশিন (ঐচ্ছিক)
নিয়মঃ-
1. সিমেন্টের নমুনা নিন এবং আপনার হাত দিয়ে সিমেন্টটি ঘষুন। পরীক্ষার নমুনা দানামুক্ত থাকতে হবে।
2. এখন 10 গ্রাম সিমেন্ট নিন এবং এটি  W1 হিসাবে নোট করুন।
3. 90 মাইক্রোন  চালনিতে 10 গ্রাম সিমেন্ট নিয়ে ঢাকনা বন্ধ করুন।
৪. এবার চালুনি কাঁপানো মেশিনে চালুনিটি দুই মিনিটের জন্য রাখুন। আপনি এটা হাতেও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ১৫ মিনিটের জন্য চালনীটি নাড়াতে হতে হবে।
৫. এরপরে,  চালনীতে থাকা অবশিষ্টাংশ ওজন করতে হবে যা  W2 হিসাবে নোট করি ।
অবশিষ্টাংশের শতাংশ=  W2*10
যদি W2 এর ওজন যদি .0462 হয় তাহলে রেসিডিও হবে (0.0462*10)=0.462 %
অর্থাৎ যদি ১০ গ্রামে রেসিডিও Z গ্রাম হয় তাহলে ১০০ গ্রামে রেসিডিও (Z÷১০)×১০০=K%
এটা থেকে আমরা ফাইন সিমেন্টের পরিমানের শতাংশেরও পরিমাপ করতে পারি,          
 (W1-W2)÷ W1×100
 ৷ 





সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২০

সার্কোলেটিং লোড (Circulating Load) কি?


সার্কোলেটিং লোড বলতে সহজ ভাষায় যা বুঝায় তা হলো , ফিডের কি পরিমান বা কত শতাংশ সিমেন্ট বারংবার  মিলে ফেরত আসে তার পরিমান।  গানিতিক ভাবে অনেকটা এভাবে লিখা যায়, কোর্স ফেরত (টন প্রতি ঘন্টা)* ১০০/ মিল থেকে যা বের হয় (টন প্রতি ঘন্টা)। সাধারণত ক্লোজ সার্কিট মিলে সার্কোলেটিং লোড করা হয়, প্রচলিত লোডের সাধারণ পরিসীমা প্রায় 100-200% হয়।
সার্কোলেটিং লোড রেশিও (সিএলআর) বলতে, বল মিলের মধ্য দিয়ে কি পরিমান কাচামাল প্রবেশকরে ও কি পরিমান মাল আবার আরো ফাইন হওয়ার জন্যে মিলে ফেরত আসে তার পরিমানের অনুপাতকে বুঝায়।সার্কিটের মধ্য দিয়ে আবর্তীত হওয়ার পরিমাণ জানা বিভিন্ন কারনে প্রয়োজন,যেমন, এটার উপর ভিত্তি করে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা করা যায়, মিলের ভিতরে বলচার্য করতে হবে কি না তার সম্পর্কে ধারনা করা যায়।গানিতিক ভাবে বলতে গেলে সার্কোলেটিং লোডের অনুপাত হলো [সার্কোলেটিং লোড÷নতুন ফিড(কাচামালের পরিমাণ)] । প্রচলিত লোড রেশিও সমীকরণটি নিম্নরূপ,
(S/F)= (M-O)÷(S-M)



এখানে এমন একটি সূত্র নিয়ে আলচনা করবো যার দ্বারা একটি  ক্লোজ সার্কিট গ্রাইন্ডিং মিল যাতে একটি স্লাইক্লোন সেপারেটর ব্যাবহার করা হয়েছে তার সার্কোলেটিং লোডের অনুপাত বের করা যাবে।
আপনার বল মিলটিতে স্লাইক্লোন সেপারেটর সেট সহ একটি ক্লোজড সার্কিটে মিল। গ্রাইন্ডিং মিলে ফিড/কাচামাল হিসাবে ক্রাশ করা ক্লিংকার ব্যাবহার করা হয়। আমরা ৮ ঘন্টার একটি সিফটের ডাটা সংগ্রহ করে তাকে টন/দিন বা টন/ঘন্টার হিসাবে বের করতে পারবো ।

মূলত তিনটি জায়গা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে হয় এবং তার রেসিডিউ নির্নয় করতে হবে । প্রথম হলো মিলের আউটলেট (চিত্রে M), দ্বিতীয়টি হলো যে পাইপ দিয়ে সেপারেটর থেকে মাল আবার মিলের ইনলেটে ঢুকে সেটা ( চিত্রে S) তৃতীয়টি হলো যে সিমেন্ট সাইলোতে যায় তার স্যাম্পল (চিত্রে  O) । স্বাভাবিক ভাবেই বুঝা যায় চিত্রে S থেকে যে স্যাম্পলটি নেয়া হবে তাতে রেসিডিও থাকবে সবচেয়ে বেশী কারন এতে ফাইন সিমেন্ট নেই বললেই চলে। তার পরে রেসিডিউ বেশী থাকবে আউটলেট স্যাম্পলে বা চিত্রে M-এ কারন এতে ফাইন এবং রেসিডিউ দুটোই আছে। সবচেয়ে কম রেসিডিউ থাকবে চিত্রে  O-এ । কারন M-এর সিমেন্ট থেকে S-এর রেসিডিউ বের করার পরে O-এ খুব সামান্য পরিমানেই রেসিডিউ থাকবে।
তাহলে একেবার সহজে আমরা সূত্রটি লিখতে পারি এভাবে ঃ-
সার্কোলেটিং লোড=(মিলের আউটলেট - ফাইন সিমেন্ট)÷(রিটার্ন বা কোর্স সিমেন্ট – আউটলেট)

উদাহরণঃ বল মিলটি স্লাইক্লোন সেপারেটর সেট সহ একটি ক্লোজড সার্কিটে মিল, যার উৎপাদন ক্ষমতা ১০০০ টন/দিন । এখানে আমরা M,S, এবং O যে সেম্পল নিয়েছি তার রেসিডিও 17.226 , 30.343 এবং 0.462 ।
Circulating Load= (M-O)÷(S-M)
(17.226-0.462) ÷ (30.343-17.226) = 1.278 বা 128%
এবং সার্কোলেটিং লোড টি টনে প্রকাশ করলে  1.278 × 1000 = 1278 টন/দিন